গোসলের ফরজ কয়টি ও কী কী? পানি দিয়ে সারা শরীর ধোয়াকে গোসল বলে। অনেকেই ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম জানেন না। ৩টি কাজ করার মাধ্যমে ফরজ গোসল করতে হয়।
গোসলের ফরজ তিনটি। নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হল –
১. গড়গড়াসহ কুলি করা
গোসলের প্রথম ফরজ হলো- গড়গড়াসহ কুলি করা। মুখের ভেতর অনেক সময় খাবারের উচ্ছিষ্ট জমে থাকে। গলার ভেতরেও কফ জমে থাকে। তাই গড়গড়াসহ কুলি করলে গলার কফ ও মুখের ভেতর জমে থাকা খাবারের উচ্ছিষ্ট দূর হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও ফরজ গোসলের অংশ হিসেবে কুলি করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৫৭ ও ২৬৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৫৬৬)
২. নাকে পানি দেওয়া
গোসলের আরেকটি ফরজ হলো- নাকের ভেতর পানি দেওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও নাকে পানি দিয়েছেন। এ সম্পর্কিত একাধিক হাদিস বর্ণিত রয়েছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৬৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৫৬৬)
৩. সারা শরীরে পানি দেওয়া
এমনভাবে গোসল করতে হবে— যাতে শরীরের কোনো অঙ্গ শুকনো না থাকে। এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস রয়েছে। সেসব হাদিস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন গোসল করতেন, তখন তার শরীরের সব অংশ ভেজা থাকতো। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২১৭)
গোসলের সুন্নত ছয়টি
১. গোসল শুরুর আগে ‘বিসমিল্লাহ রাহমানির রাহিম’ পাঠ করা।
২. পবিত্রতা অর্জনের নিয়ত করা।
৩. দুই হাতের কব্জি ওযুর মতো তিনবার পরিষ্কার করা।
৪. কাপড় অথবা শরীরের কোথাও অপবিত্র কোনো কিছু থাকলে— গোসলের আগে তা পরিষ্কার করা।
৫. গোসলের আগে অজু করা। গোসলের স্থান নিচু হলে ও পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে টাখনুসহ দুই পা পরে পরিষ্কার করা।
৬. ডান দিকে তিনবার, বাম দিকে তিনবার ও মাথার ওপর তিনবার পানি প্রবাহিত করা।
গোসল কখন ফরজ? জেনে নিন ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম
পাঁচটি কারণে গোসল ফরজ হয়। কারণগুলো হলো-
১. স্বামী-স্ত্রী সহবাস করলে কিংবা পুরুষের স্বপ্নদোষ হলে।
২. নারীদের ঋতুস্রাব অথবা পিরিয়ড হলে।
৩. সন্তান প্রসবের পর রক্তপাত বন্ধ হলে।
৪. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া জীবিতদের জন্য।
৫. কোনো অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে।
গোসল কখন সুন্নত?
চারটি কারণে গোসল সুন্নত। কারণগুলো হলো-
১. জুমার নামাজের আগে গোসল করা সুন্নত।
২. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের আগে গোসল করা সুন্নত।
৩. ইহরামের জন্য গোসল করা সুন্নত।
৪. হাজীদের আরাফায় অবস্থানের সময় গোসল করা সুন্নত।