ইসলাম

দোষচর্চা বড় গুনাহ

কারো সঙ্গে মতভেদের কারণে তার ব্যক্তিজীবন মানুষের কাছে প্রকাশ ভীষণ নিন্দনীয়। এভাবে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার মানসিকতা খুবই ঘৃণ্য ও গর্হিত। শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে যেমন নিকৃষ্ট। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও শালীনতাবিরোধী।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১২)

গিবত-পরনিন্দা ও দোষচর্চা
আবু হুরাইরা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, একদা আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘তোমরা কি জান, গিবত কাকে বলে?’ লোকেরা বলল, আল্লাহ ও তার রাসুল অধিক জানেন। তিনি বললেন, ‘তোমার ভাই যা অপছন্দ করে, তাই তার অনুপস্থিতিতে আলোচনা করা।’ বলা হল, ‘আমি যা বলি, তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে, তাহলে আপনার রায় কী? (সেটাও কি গিবত হবে?)’ তিনি বললেন-

‘তুমি যা (সমালোচনা করে) বললে, তা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলেই তার গিবত করলে। আর তুমি যা (সমালোচনা করে) বললে, তা যদি তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তাকে অপবাদ দিলে।’

(মুসলিম, হাদিস : ২৫৮৯)

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন আমাকে মিরাজে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই সময় এমন ধরনের কিছু মানুষের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলাম, যাদের নখ ছিল তামার, তা দিয়ে তারা নিজেদের মুখমণ্ডল খামচে ক্ষত-বিক্ষত করছিল। আমি প্রশ্ন করলাম, ওরা কারা হে জিবরিল? তিনি বললেন, ওরা সেই লোক, যারা মানুষের গোশত ভক্ষণ করত ও তাদের সম্ভ্রম লুটে বেড়াত।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮)

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, তুমি যখন তোমার সঙ্গীর দোষচর্চা করতে ইচ্ছা করো, তখন তোমার নিজের দোষ স্মরণ করো।

(আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩২৮)

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ব্যতিব্যস্ত হয়ো না এবং কারো গোপন তথ্য ফাঁস করো না। কেননা তোমাদের পশ্চাতে রয়েছে কিয়মতের) ভীষণ কষ্টদায়ক ও দীর্ঘস্থায়ী বিপদগুলো। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩২৭)

দোষ গোপন করার ফজিলত
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৫৪৪)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন। আর যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপনীয়তা ফাঁস করে দেবে, আল্লাহ তার গোপন বিষয় ফাঁস করে দেবেন, এমনকি এই কারণে তাকে তার ঘরে বসিয় অপদস্থ করবেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৫৪৬)

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button