হজমে সমস্যা হলে
যেকোনো শারীরিক সমস্যায় আমরা সবার আগে ওষুধের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিক বা হজমের সমস্যা হলে তো কথাই নেই। সকাল-বিকাল চলে ওষুধ খাওয়া। কিন্তু ওষুধ উপকারী হলেও তাতে থাকে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। আপনি যদি হজমের সমস্যায় নিয়মিত ওষুধ খেতে শুরু করেন তবে একটা সময় ওষুধ ছাড়া আর খাবার হজম হতে চাইবে না। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ঘন ঘন খেলে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। তাই ওষুধের ওপর নির্ভরশীল থেকে নয়, বরং ওষুধ ছাড়াই স্বাভাবিক উপায়ে হজমের অভ্যাস করতে হবে। এমনসব খাবার খেতে হবে যা হজমের জন্য সহায়ক।
শুধু খাবার খেলেই হবে না, হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখার জন্য মেনে চলতে হবে কিছু কৌশলও। বেশিরভাগ মানুষই খাবারের ক্ষেত্রে রুটিন মেনে চলতে পারেন না। ক্ষুধা পেলে কিছু একটা খেয়ে নেয়া বা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার অভ্যাস অনেকের। এসব কারণেও দেখা দিতে পারে গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা। তাই সঠিক খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খাবারের সময়ও রাখতে হবে সঠিক। খাবার খাওয়ার সময় আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলে ওষুধ ছাড়াই হজমের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া
যতই তাড়াহুড়ো থাকুক, খাবার খাওয়ার সময় চেষ্টা করুন সময় নিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়ার। কারণ তাড়াহুড়ো করে না চিবিয়ে খেয়ে ফেললে সেই খাবার হজম হতে চায় না সহজে। তখন দেখা দিতে পারে বদ হজমের মতো সমস্যা। আপনি যদি খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান তবে তাতে নানা উৎসেচক যোগ হয়। সেসব উৎসেচক খাবারকে সহজপাচ্য করে। ফলে হজম ভালো হয়। আর হজম ভালো হওয়া মানে সুস্থতা অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া।
গ্রিন টি খাবেন যে কারণে
চা পান করার অভ্যাস আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই। চায়ের আছে নানা উপকারিতা। তবে গ্রিন টি খেলে মিলবে আরও অনেক বেশি উপকার। আমাদের হজমের কোনোরকম সমস্যা হলে তার সমাধান দিতে পারে গ্রিন টি। উপকারী এই চায়ে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা হজমের সহায়ক উৎসেচকগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। ফলে হজম সহজ হয়। নিয়মিত গ্রিন টি খেলে তা পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত ঝাল-মশলা এড়িয়ে চলুন
ঝাল-মশলা খারাপ নয়। বরং মরিচ এবং বিভিন্নরকম মশলার আছে নানা উপকারিতা। কিন্তু তা খেতে হবে পরিমিত। রান্নায় অতিরিক্ত ঝাল-মশলা ব্যবহার করলে তা আপনাকে অসুস্থ করে দিতে পারে। অতিরিক্ত ঝালের কারণে দেখা দিতে পারে আমাশয়ের মতো সমস্যা। তাই সম্ভব হলে রান্নায় শুকনো মরিচের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। ঝাল খেতে ইচ্ছে হলে কাঁচা মরিচ খেতে পারেন। কারণ কাঁচা মরিচে আছে ক্যাপসাইসিন নামক উপাদান। এটি হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে কোনো ঝাল খাবারই একসঙ্গে অনেকখানি খাবেন না।
সহজপাচ্য খাবার
হজম সহজ করার জন্য খেতে হবে সহজপাচ্য খাবার। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর শাক-সবজি। আবার কিছু খাবার রয়েছে যা কাছাকাছি সময়ে বা একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মাংসের মতো উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরপরই দুধ খাবেন না। পেট ভরে ভাত খাওয়ার পরপরই কোনোরকম ফল খাওয়া যাবে না। এ ধরনের খাবার খাওয়ার মাঝখানে অন্তত আধা ঘণ্টা বিরতি নিন। এতে করে হজম প্রক্রিয়া সহজ হবে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দেবেন কেন
প্রক্রিয়াজাত খাবার আমাদের শরীরের জন্য কখনোই উপকারী নয়। তাই যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। তাজা ও পুষ্টিকর খাবার খান। ক্রিয়াজাত খাবার খেলে তা হজমের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় ক্রিয়াজাত খাবার টিনজাত করার ক্ষেত্রে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। সেসব রাসায়নিক পরিপাকতন্ত্রের কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে।