শিশু কথা শুনতে চায় না?
শিশুরা দুরন্ত। তারা স্বভাবগত কৌতুহল থেকে প্রশ্নের পরে প্রশ্ন করে যায়। তাদের অক্লান্ত ছোটাছুটি যেন থামতেই চায় না! দুরন্ত এই শিশুদের বাধ্যগত রাখা মা-বাবার জন্য অন্যতম কঠিন কাজ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মা-বাবার অভিযোগ হলো- শিশু কথা শোনে না। যখন শিশুকে শাসন করার প্রয়োজন, তখন মা-বাবাকে আরও বেশি কৌশলী হতে হবে। প্রথমত যেকোনো বিষয়ে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে। তারপরও না শুনলে আরেকটু কঠিন হতে হবে। তবে মারধোর বা উপহাস-তিরস্কার করা যাবে না। কারণ এরকম ব্যবহার করলে শিশুর মনে খারাপ প্রভাব পড়ে।
শিশু যদি আপনার কোনো আচরণকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে না করে, কোনো কথায় পাত্তা না দেয় তখন করণীয় কী? অনেক মা-বাবা এক্ষেত্রে একটি ভুল করেন। সেটি হলো শিশুকে নানাভাবে শাস্তি দিয়ে থাকেন। কিন্তু শিশু যদি একবার শাস্তি পেতে অভ্যস্ত হয়ে যায় তাহলে মুশকিল। কারণ সে তখন আর কোনোকিছুতেই ভয় পাবে না। বরং আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠবে। মা-বাবাকে আরও বেশি উপেক্ষা করা শুরু করবে। শিশু কথা না শুনলে মা-বাবা হিসেবে করণীয় জেনে নিন-
সমাধান খুঁজে বের করুন
প্রত্যেক শিশুই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের হয়ে থাকে। কেউ হয়তো খেলনা কেড়ে নিয়ে গেলে মন খারাপ করে, কেউবা গল্পের বই পড়তে না দিলে। তাই শিশু কথা না শুনতে চাইলে তাকে এমন কোনো সুবিধা দেয়া বন্ধ করুন যেটি তার সবচেয়ে বেশি পছন্দ। তবে খেয়াল রাখবেন সেই শাস্তি যেন শিশুর জন্য অতিরিক্ত না হয়। কারণ শিশুরা অল্পতেই মন খারাপ করে ফেলে। তাই কেবল শিশু অবাধ্য হলেই এ ধরনের উপায় বেছে নিন।
শিশুকে বলতে দিন
অনেক সময় মা-বাবা শিশুর কথা মনোযোগ দিয়ে না শুনেই বকাঝকা করে থাকেন। এমনটা করা যাবে না। প্রথমে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। সে কী বলতে চায়, কী করতে চায় তা জেনে নিন। সে যদি অমার্জিত কোনো আচরণ করে তবে তা আপনার জন্য কতটা বিব্রতকর তাও বুঝিয়ে বলুন। অন্যের সঙ্গে কথা বলার সময় কীভাবে সাবধানী থাকতে হবে তাও শিশুকে বুঝিয়ে বলুন। প্রয়োজনে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
না শোনার অভিনয়
শিশু যদি আপনার কথা শুনতে না চায় তবে আপনিও একটু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। সে যখন কোনো কিছু চাইবে বা বলবে তখন আপনিও না শোনার অভিনয় করুন। এতে সে উপলব্ধি করতে শিখবে কেউ কথা না শুনলে কেমন অনুভূতি হয়। তখন সে আপনার কথার অর্থ বুঝতে পারবে।
শিশুর প্রশংসা করুন
মানুষ নিজের প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে। তাই শিশুকে তিরস্কারের বদলে প্রশংসা করুন। তার ছোট ছোট কাজগুলো কতটা সুন্দর, কী করলে আরও বেশি সুন্দর হতে পারে তা বলুন। এতে সে কাজের প্রতি আরও উৎসাহী হবে। তবে সেই প্রশংসা যেন খুব বেশি না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কারণ অতিরিক্ত কোনোকিছুই সুফল বয়ে আনে না। তাই অতিরিক্ত প্রশংসা পেলে শিশুও বিগড়ে যেতে পারে। শিশু ভালো কোনো কাজ করলে তার প্রশংসা করুন। তাকে আচরণে মার্জিত হতে শেখান।