শীতেও থাকুন সুন্দর
শীত মানেই কি ধূসরতা আর প্রাণহীন চারপাশ? আর্দ্রতাহীন আবহাওয়া, ধুলোবালি, পাতাশূন্য গাছ- শীতের এই রূপের বিরূপ প্রভাব নিশ্চয়ই পড়ছে আপনার ত্বকেও। প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুষ্ক আর মলিন হতে থাকে ত্বকও। এদিকে শীত এলে কম পানি পান করাটাও অভ্যাস করে ফেলেন অনেকে। যে কারণে কমতে থাকে ত্বকের ভেতরের আর্দ্রতা। ফলে ত্বক রুক্ষ থেকে রুক্ষতর হয়ে ওঠে। শীতের সময়ে যেমন বাইরে থেকে বাড়তি যত্ন নিতে হয়, তেমন ভেতর থেকেও সুস্থ থাকা জরুরি। এসময়ে পান করতে হবে পর্যাপ্ত পানি, খেতে হবে প্রচুর শাক-সবজি ও ফলমূল। প্রতিদিনের খাবারের দিকে রাখতে হবে বিশেষ নজর। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল করতেও কাজ করে সেসব খাবার।
খাবারের তালিকায় রাখতে হবে কার্বোহাইড্রেট, এসেনশিয়াল ফ্যাট ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। শীতের সময়ে বাজারে প্রচুর শাক-সবজির দেখা মেলে। সেসব শাক-সবজি নিয়মিত খেতে হবে। ত্বককে ভেতর থেকে ভালো রাখতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হলো নানারকম শাক-সবজি ও ফল। তাই এগুলো খাওয়ার প্রতি জোর দিতে হবে। হলুদ, সবুজ, কমলা, লাল, গোলাপি, বেগুনি নানা রঙের ফল ও সবজি এখন মিলবে বাজারে। সহজলভ্য এসব খাবার এই শীতেও আপনার ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করবে। তাই পছন্দমতো রঙিন সব ফল ও সবজি রাখুন প্রতিদিনের খাবারের তালিকায়।
ত্বক ভালো রাখতে কোন ফলগুলো বেশি কার্যকরী তা নিয়ে ভাবনায় পড়ে যান অনেকে। এই শীতে এমন ফল পাতে রাখুন যেসব ফলে ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি বেশি আছে। কোন ফলগুলোতে এই উপাদানগুলো বেশি আছে তা জেনে নিন। খেতে পারেন পেঁপে, পেয়ারা, কলা, কিউয়ি, স্ট্রবেরি, পিচ, কমলা, বাতাবিলেবু ইত্যাদি ফল। এসব ফল নিয়মিত খেলে ত্বক বেশ ভালো থাকে। মুখে সহজে বয়সের ছাপও পড়ে না। শুধু ফল খেতে ভালো না লাগলে খেতে পারেন সালাদ তৈরি করে। ফ্রুটস কাস্টার্ড তৈরি করেও খেতে পারেন। পাশাপাশি মৌসুমী নানা ফল রাখতে পারেন রূপচর্চার কাজেও। ফলের ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয় দ্রুত।
সব ধরনের শাক-সবজি উপকারী হলেও কিছু শাক-সবজি ত্বকের যত্নে বেশি উপকারী। ত্বক ভেতর থেকে সুন্দর রাখতে নিয়মিত খান পালং শাক, মেথি শাক ও ধনে পাতা। এতে ত্বক তো ভালো থাকবেই, সেইসঙ্গে ভালো থাকবে শরীরও। শীতের ফসলের মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচা হলুদ ইত্যাদি। এসব থাকুক আপনার প্রতিদিনের খাবারে। এই উপকারী ভেষজ ও মশলাগুলো ত্বক সুন্দর রাখতে বেশ কার্যকরী। প্রতিদিন পরিমিত খেলে নিজেই পার্থক্য অনুভব করতে পারবেন।
ত্বক ও চুল ভালো রাখতে প্রোটিনের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বিভিন্নরকম বাদাম ও সিডস রাখতে হবে পাতে। পাশাপাশি প্রাণিজ প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস, ডিমও খেতে হবে পরিমিত। নানারকম ডাল ও দুধ জাতীয় খাবার খেতে পারেন। প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা মেটানো জরুরি। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো প্রোটিনে অ্যালার্জি থাকতে পারে। তেমন সমস্যা হলে সেই খাবার এড়িয়ে চলুন।